
পাগলামি ভয়ানক নয়; এরপরে সুস্থতায় ফিরে আসাটা ভয় ধরায় বৈকি! আর আর প্রাণীর
চললেও, মানুষের অন্ধকার ভয় করলে চলে না। যা প্রতিনিয়তই বয়ে বেড়াতে হয়, তাতে
ভয় করা মানে আলোর সন্ধানে না যাবার পাঁয়তারা। দু’টো দিন নিরন্তর অন্ধকার
বাস চলল আমার। কোন রকম গ্রামার মানা ছাড়াই! রোজকার ভোজ গ্রহণ আর ত্যাগ ছাড়া
কক্ষবন্দী নিজেই নিজের কাছে। প্রশ্ন আসে- কথা চলে চলছেই আশে-পাশে, অথচ
আমার উত্তর ঘোর আকাশবন্দী.. শুন্যই থাকে... প্রশ্নদাতার প্রহর কাটিয়েও
প্রশ্ন ঘটে জল ছিটায় না। প্রশ্নকর্তা ক্লান্ত হয়; জিজ্ঞাসায় ভর্তা বানাতে
ব্যস্ত হয় অন্য কিছু। এভাবে হঠাত এলোমেলো হওয়া মানে কি সৃষ্টিশুন্য হবার
ভয়? নয়; তাও নয়। তাই হলে কৌশলে লেখারা এভাবে চলতেই থাকত না।
বাক-প্রতিবন্ধিতার মত ভয়ানক আর কিইবা হতে পারে? বলতে চেয়ে না বলতে পারা, না
বলা, বলার অনিচ্ছ্বা... কি এর মানে? পাশের বাড়ির ছোট্ট মেয়েটি হুটোপুটি
মেরে ছুটে আসে.. দৌড়ে কাছে আসতে নিতেই ধাক্কা খায়; দরজায় সচকিতে থমকে
দাঁড়ায়! ভয় খাওয়া বোবাটে.. বোকাটে দৃষ্টি মেলে ফ্যালফ্যালে তাকিয়ে থাকা
তাঁর! আমি বিরক্ত হই, আমার ক্লান্তি আসে। শেষে খাবার রেখেই উঠে দাঁড়াই,
বেসিনে কলকলে জল ছেড়ে হাত ধুয়ে আসি। আবার কক্ষবন্দী হই অন্ধকারের গা ছুঁয়ে।
অন্ধকার অজগরী ভঙ্গীতে আসে.. গ্রাস করার চেষ্টায় মগ্ন হই, বাহু লগ্ন হয়,
অথচ, উলটো আমিই অন্ধকারের হাড়-মাংস চিবুনোর ভাব করে আধ-আঁধারী স্বাদ চাখি।
বাড়িতে গ্রাম্য অতিথি আসে.. আমায় দেখে ড্যাবড্যাবে চোখ ফেটেই যাবে যেনবা!
অত সব বিস্ময়ী দৃষ্টির ভাষা পড়তে আমায় দুর্বোধ্যতা পেয়ে বসে। আমি অক্ত
অনুসারেই আবার ভেতরে ডুব দেই। দু’টো দিন পরেই নিজেকে দেখার সাধ জাগে। যতই
বলি সব শেষেও মানুষ, সাধু-সন্ত তো নই। তাই পরশী আরশীটার নজরবন্দী হই।
নিজেকে দেখে নিজেই ধাক্কা খাই। কে এ? আমি! এ কোন আমি? ভাবতে থাকি, ভাবনা
আসে, আসবেই। যখন তুমি নিজেকে হারিয়ে নিজেকেই খুঁজবে.. নিজেকে না বোঝার
কষ্টের সাথে ডুয়েলে যুঝবে, তখন ভাবনা দেবীর আসতেই হয়। উরোধুরো রাশ রাশ চুল
বাঁশপাতার মতন তীক্ষ্ণতা নিয়ে আরশীটার ভেতর দিয়ে উদ্ভ্রান্ত ভাবে চেয়ে আছে।
কপাল দখল করে চোখ এই ছুঁই তো ঐ ছুঁই! কেন যেন বাবুই পাখির কথা ভাবার
চেষ্টা করি। আর তার বাসা। কিন্তু প্রাসঙ্গিকতা কোথায়?!
0 comments:
Post a Comment